নিয়মিত লেবুর পানি খেলে বিস্ময়কর উপকার


এক গ্লাস পানি এবং একটা অর্ধেক লেবু। এই দুটি উপাদানের সহযোগে বানানো শরবত রাত দিন খেলেই দেখবেন ডাক্তারের চেম্বারের ঠিকানা আপনি একেবারে ভুল গেছেন। কেননা একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে, নিয়মিত লেবু পানি খাওয়া শুরু করলে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকার। যেমন ধরুন-

লিভারের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত লেবু পানি খেলে লিভারে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। ফলে লিভারের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।

পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়
লেবু পানির ভেতরে যে কেবল ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মজুত থাকে, তা নয়, সেই সঙ্গে উপস্থিত থাকে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম এবং আরও কত কী, যা দেহের ভেতরে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে শরীরকে শক্তপোক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

দেহের ভেতরে পি এইচ লেভেল ঠিক থাকে
ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে লেবু পানি খেলে দেহের ভেতরে পি এইচ লেভেলের ভারসাম্য ঠিক থাকে। ফলে ভেতর এবং বাইরে থেকে শরীর এতটাই চাঙ্গা হয়ে ওঠে যে দেহের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না।

টিবি রোগের চিকিৎসায় কাজে আসে
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে এমনটা দাবি করা হয়েছে, টিবি রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধের সঙ্গে লেবুর মতো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যদি খাওয়া যায়, তাহলে ওষুধের কর্মক্ষমতা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। ফলে রোগের প্রকোপ কমতে সময়ই লাগে না।

কিডনির পাথর প্রতিরোধ করে 
লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর জমা প্রতিরোধ করে। এই সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর প্রতিরোধের পাশাপাশি জমে থাকা পাথর বের করতেও সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন লেবু পানি খাওয়া শুরু করলে দেহের বেতরে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এত মাত্রায় শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।

ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে
হাজারো বিউটি প্রডাক্ট যা করে উঠতে পারেনি, তা লেবু পানি নিমেষে করে ফেলতে পারে। আসলে এই পানীয়তে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান ত্বকের হারিয়ে যাওয়া ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনে। সেইসঙ্গে ত্বকের বয়স কমানোর পাশাপাশি ব্ল্যাক হেডস এবং বলিরেখা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, গরমকালে ত্বককে ঠাণ্ডা এবং ঘামমুক্ত রাখতে লেবুর পানি দিয়ে বারে বারে মুখটা ধুতে পারেন, দেখবেন উপকার পাবেন।

ওজন হ্রাস পায়
নিয়মিত লেবু পানি খেলে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্তি মেদ ঝরে যেতে একেবারেই সময় লাগে না। কারণ লেবুর বেতরে উপস্থিত পেকটিন নামক একটি উপাদান, শরীরে প্রবেশ করার পর অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে বারে বারে খাবার খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। আর যেমনটা আপনাদের সবারই জানা আছে, কম মাত্রায় খাবার খেলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে কম মাত্রায় ক্যালরির প্রবেশ ঘটে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগই পায় না।

মানসিক অবসাদের খপ্পর খেতে মুক্তি মেলে
একাধিক গবেষণায় এ কথা প্রমাণিত হয়েছে যে নিয়মিত লেবুর পানি খেলে স্ট্রেস একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে অবসাদের প্রকোপও কমে। আসলে লেবু পানিতে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে এমন সব সমস্যা নিমেষে কমে যেতে শুরু করে।

এনার্জির ঘাটতি দূর হয়
ঘুম থেকে উঠে চা বা কফি না খেয়ে প্রতিদিন এক গ্লাস করে লেবুর পানি খাওয়ার চেষ্টা করুন। এমনটা করলে দেখবেন শরীর চনমনে হয়ে উটতে সময়ই লাগবে না। আসলে লেবুর ভেতরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে সকাল সকাল শরীর এবং মস্তিষ্ক চাঙ্গা হয়ে উঠতে একেবারেই সময় লাগে না।

শ্বাস কষ্টের মতো সমস্যা কমে
যারা অ্যাস্থেমা বা কোনও ধরনের রেসপিরেটরি প্রবলেমে ভুগছেন তারা যত শীঘ্র সম্ভব রোজের ডায়েটে লেবুর পানিকে অন্তর্ভুক্ত করুন। দেখবেন কেমন ফল পান! আসলে এই পানীয়টি শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত একাধির জটিলতাকে কমিয়ে ফেলতে দারুন কাজে আসে।

নিশ্বাসে সজীবতা আনে
খাওয়ার পর অনেক সময় মসলা- পেঁয়াজ, রসুন বা মাছের গন্ধ মুখে লেগে থাকে। মুখের দুর্গন্ধ বা নিশ্বাসের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে খাওয়ার পর এক গ্লাস লেবুর পানি পান করতে পারেন। এক্ষেত্রে সকালে পান করলেও ফল পাওয়া যায়। এছাড়া লেবু পানিতে কুলকুচি করলেও মুখ সতেজ ও সুস্থ থাকে।

স্ট্রেস এবং অবসাদের থেকে মুক্তি মেলে
একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে, নিয়মিত লেবুর পানি খেলে স্ট্রেস একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে অবসাদের প্রকোপও কমে। আসলে লেবু পানিতে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে এমন সব সমস্যা নিমেষে কমে যেতে শুরু করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে
লেবু পানিতে থাকে প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম, যা রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো এমন রোগে যারা বহু দিন ধরে ভুগছেন তারা প্রতিদিন সকাল-বিকাল লেবু পানি খাওয়া শুরু করুন, দেখবেন দারুন ফল পাবেন। তবে এমনটা করার আগে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে ভুলবেন না যেন।

পেটের স্বাস্থ্যের প্রকোপ কমে
যারা বদ হজম, কনস্টিপেশন, বারংবার পেট খারাপসহ নানাবিধ পেটের রোগে ভুগে থাকেন তারা প্রতিদিন সকালে গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। এমনটা করলে স্টমাক অ্যাসিডের ক্ষরণ ঠিক মতো হতে শুরু করবে। ফলে রোগের প্রকোপ তো কমবেই, সেই সঙ্গে শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর উপাদান বা টক্সিনও বেরিয়ে যাবে।

মুখ গহ্বরের নানা রোগ নিমেষে সেরে যায়
মুখ থেকে খুব দুর্গন্ধ বেরয়? এদিকে নানা কিছু করেও সুরাহা মিলছে না? তাহলে আজ থেকেই লেবু পানি খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন বদ গন্ধ একেবারে কমে যাবে। শুধু তাই নয়, মাড়ি থেকে রক্ত পাত এবং দাঁতে যন্ত্রণা হওয়ার মতো সমস্যা হলেও এই ঘরোয়া পদ্ধতিটিকে কাজে লাগাতে পারেন। দেখবেন দারুন উপকার পাবেন।

সংক্রমণের প্রকোপ কমে
লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ। তাই তো লেবু পানি যে কোনও ধরনের সংক্রমণ, বিশেষত গলার সংক্রমণ কমাতে দারুনভাবে সাহায্য় করে থাকে। এক্ষেত্রে লেবু পানি দিয়ে গার্গেল করলেই উপকার পাওয়া যায়।


আরও পড়ুন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.