চট্টগ্রামে নিখোঁজ কলেজ ছাত্র দূর্জয় বড়ুয়াকে উদ্ধারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন


নিজস্ব প্রতিবেদক : নিখোঁজের ২৪ দিন অতিবাহিত হলেও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র দূর্জয় বড়ুয়া’র কোন খোঁজ না পাওয়ায় উদ্ধারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দূর্জয়ের পরিবার। সোমবার (১৪ জুন) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিখোঁজ দূর্জয়ের মা উর্মিলা বড়ুয়া।ৃ

এসময় তিনি বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান । আমার ছেলে দুর্জয় বড়ুয়া চট্টগ্রাম কলেজ হইতে এইচ.এস.সি পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য লেখাপড়া করছিলেন। এমতাবস্থায় প্রতিদিনের মতো গত ২ মে বিকাল সাড়ে ৫ টায় বাসা হইতে প্রাইভেটে যাওয়ার কথা বলে বাহির হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরবর্তীতে বাসায় ফেরার নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে ফোন করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এর পর আত্মীয় স্বজনের বাসায় গিয়েছিলো কিনা খোঁজ খবর নিই এবং দূর্জয়ের সহপাঠীদের সাথে যোগাযোগ করিলে তারা চট্টগ্রাম কলেজের প্রভাষক ইউনুছ স্যারের সাথে যোগাযোগ করতে বলে।এর পর প্রভাষক ইউনুছ স্যারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভিন্ন স্থানে অবস্থানের কথা বললেও স্থান সমূহে গিয়ে দূর্জয়ের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হই। পরবর্তীতে ইউনুছের সাথে আবারও যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান দূর্জয়ের বব্ধু জীবন ও হৃদয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তারা দুর্জয়ের খোঁজ দেবে।

এর পর অনেক খোঁজাখুজি করে দূর্জয়কে না পেয়ে গত ২২ জুন ইপিজেড থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করি, যাহার নম্বর ১০৫১/ এবং ২৬ জুন পতেঙ্গা র‍্যাব-৭ এর দফতরেও একটি নিখোঁজ ডায়েরি করি। পরে উদ্ধার তৎপরতায় প্রশাসনের দৃশ্যমান তেমন কোন অগ্রগতি না দেখে গত ৭ জুন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে আমরা মানববন্ধন করি। মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত দুর্জয়কে উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী ঘোষণা করেন এবং তারই ধারাবাহিতায় আজকের সংবাদ সম্মেলন। সেইদিন মানববন্ধন হতে প্রভাষক ইউনুছের গ্রেফতারের দাবী করলেও প্রশাসন এখনও নীরব বলে জানান দূর্জয়ের মা উর্মিলা।তিনি আরও বলেন, দুর্জয়কে উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের কাছে সাহায্য চেয়ে বার বার ব্যর্থ হয়েছি। আশংকা করছি আমার ছেলে অপহরণকারী সংঘবদ্ধ চক্রের কাছে জিম্মি রয়েছে এবং আমার ছেলেকে মেরেও ফেলতে পারেন ওই সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্র। তাই আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে আমার অবুজ সন্তান উদ্ভারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানাচ্ছি।

এবিষয়ে থানায় ডায়েরি সূত্রে দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার আলতাফ হোসেনের কাছে অগ্রগতির বিষয় জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দূর্জয়ের নিখোঁজ ডায়েরি করার পর প্রথমে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এস আই সুজন বড়ুয়াকে। পরবর্তীতে দায়িত্ব পাই আমি আলতাফ হোসেন। বর্তমানে পুরো বিষয়টা তদন্তের কাজ করছেন সিএমপি’র চৌকস টিম কাউন্টার টেরোরিজম। কাউন্টার টেরোরিজম শুধু জীবন আর হৃদয়কে নয় তার আরও অনেক বন্ধু বান্ধবকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এর পর প্রভাষক মোঃ ইউনুসকেও ডেকে এনে কয়েক ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এখন নিখোঁজের ঘটনার বিষয়টি পুরো দায়িত্ব কাউন্টার টেরোরিজমের। তিনি আরও বলেন, কাউন্টার টেরোরিজম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এবিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন এবং অনেক আন্তরিকতার সাথে দেখছেন বিষয়টি। যেহেতু যৌথ ভাবে আমরা বিষয়টি দেখছি, সেহেতু যাতে ভালো একটা সুখবর দিতে পারি সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, দূর্জয়ের ঠাকুর মা জয়া বড়ুয়া, ভূপাল বড়ুয়া, স্বরুপ চৌধুরী সাজু, মিথুন রস্মি বড়ুয়া, প্রকৌশলী পরিতোষ বড়ুয়া, প্রদীপ বড়ুয়া ও এড. দীর্ঘতম বড়ুয়া সহ সন্মিলিত বৌদ্ধ নাগরিক পরিষদের নেতৃবন্দগন।


আরও পড়ুন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.