আমার চোখে নায়ক রাজ রাজ্জাক ছিলেন চলচ্চিত্রের বাতিঘর
কে এম রাজীব : আমি চলচ্চিত্রের কেউ নই সাধারণ একজন দর্শক। তবুও চলচ্চিত্র এবং চলচ্চিত্রের অভিনয় শিল্পীরা আমার কাছে খুব প্রিয়। ছোটবেলা থেকে চলচ্চিত্রের প্রতি আমি খুবই দূর্বল এবং সিনেমা পাগল ছিলাম। চলচ্চিত্র থেকেও মানুষ অনেক কিছু জানতে পারে, শিখতে পারে এবং এর মাধ্যমে মানুষ অনেক সংশোধন হতে পারে। আমার জানা মতে চলচ্চিত্রও একটি মাধ্যম। এক কথায় যাকে বলা হয় ” ফ্লিম মিডিয়া “। আর এ ফ্লিম মিডিয়া থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি, জেনেছি, অনুধাবন করেছি, এখনো শ্রদ্ধার সাথে প্রয়াত, জীবিত সকল অভিনয় শিল্পীদের স্মরণ করি এবং চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি। যখন থেকে সিনেমা দেখা শুরু করি তখন থেকে নায়ক রাজ রাজ্জাকের অভিনয় আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমার চোখে নায়ক রাজ রাজ্জাক ছিলেন চলচ্চিত্রের বাতিঘর। আজ এ মহানায়কের ৬ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৭ সালের ২১ আগষ্ট ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আজকের এই দিনে তাঁর প্রতি রইলো আমার বিনম্র শ্রদ্ধা।
আমার জানা মতে যখন থেকে আমি নায়ক রাজ রাজ্জাক সিনেমা দেখি তখন থেকে সিনেমা বাণিজ্য সুফল ছাড়া বিফল হয়নি। আমার মনে আছে ৮০’র দশকে যখন উনার সামাজিক ছবি ” পুত্রবধূ ” হলে দেখতে যায়, তখন কি পরিমাণ অপেক্ষা করতে হয়েছিলো। ৫ম বারের মতো গিয়ে ছবিটা দেখার সৌভাগ্য হয়েছিলো আমার। শুধু তাই নয়, এ প্রয়াত কিংবদন্তি মহানায়কের যে সিনেমা গুলো মধ্যে যে গুলো আমি দেখেছি, সে গুলোর মধ্যে- অন্তত প্রেম, আনারকলি, জিঞ্জির, বন্ধু, সমাধি, অংশীদার, চাঁদ সুরুজ, মহানগর, বাবা কেন চাকর, আসামি, অভিযান, বদনাম, রংবাজ, কাবিন, নাজমা, অবুঝ মন, সন্ধী, সমর, ছুটির ঘন্টা, অশিক্ষিত সহ আরো অনেক। যা বলে শেষ করা যাবেনা। উনার যে সিনেমা গুলো আমি দেখেছি সব সিনেমা গুলো হলে গিয়ে দেখতাম, দেওয়ালে ঝুলানো লিখা ” হাউসফুল “।
প্রসঙ্গত, নায়ক রাজ রাজ্জাক ছিলেন একজন জনপ্রিয় বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের গুণী অভিনেতা। নিজের জন্মস্থান কলকাতায় মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন এবং ১৯৬৬ সালে ১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে। তিনি জহির রায়হানের বেহুলা চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন। ষাটের দশকের শেষের দিকে এবং সত্তরের দশকেও তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের প্রধান অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হত। অভিনয় জীবনে তিনি বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নিচে, জীবন থেকে নেয়া, ওরা ১১ জন, অবুঝ মন, রংবাজ, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, ছুটির ঘণ্টা এবং বড় ভালো লোক ছিলসহ মোট ৩০০টি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পাশাপাশি তিনি সব মিলিয়ে ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন। তার মালিকানার রাজলক্ষী প্রোডাকশন থেকে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রও নির্মিত হয় এ প্রয়াত অভিনেতা মহানায়ক নায়ক রাজ রাজ্জাকের।