চট্টগ্রামে কোনো নির্বাচন বিতর্কিত হতে দেব না: ডিসি
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, আগামী ১৬ মার্চ বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও নাজিরহাট পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ দুটিসহ কোন নির্বাচন আমরা বিতর্কিত হতে দেব না।
ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতি ৩ ইউনিয়ন ও পৌরসভা নির্বাচনে প্রতি ৩ ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবে। ভোট কেন্দ্রগুলোর পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিজিবি, পুলিশ, র্যাবসহ আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক ফোর্স মোতায়েন থাকবে।
কেন্দ্রে গিয়ে আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার, অযথা গোলযোগ সৃষ্টি, ভোট গ্রহণের শেষের দিকে লোক জড়ো করানো, ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা গুজব রটানো, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে। যে কোন মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
আজ বুধবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচন ও নাজিরহাট পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় ও আইন–শৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক এসব কথা বলেন।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার এ সভার আয়োজন করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটাররা কিভাবে ভোট প্রদান করবেন সে বিষয়ে আগামী ১৩ ও ১৪ মার্চ নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করা হবে।
নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত স্টিকার ছাড়া কোনো যান্ত্রিক যানবাহন নির্বাচনী এলাকায় চলবে না। ভোটের ৩৬ ঘণ্টা পূর্বে থেকে মোটসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে। এসময়ে বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও এসি–ল্যান্ডদের অযথা ফোন করে গুজব ছড়ানো যাবে না। ভোট গ্রহণের দিন প্রার্থীসহ নির্বাচনের কাজে সম্পৃক্ত কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে না।
নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া কেউ ভোট কেন্দ্রে ও ভোটার ছাড়া কেউ বুথে প্রবেশ করতে পারবে না। এর ব্যত্যয় ঘটলে ছাড় নেই।
সভায় জেলার পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেয়া আমাদের সকলের দায়িত্ব। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আইন–শৃক্সখলা বাহিনী ও প্রশাসন থাকবে কঠোর অবস্থানে।
বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচন ও নাজিরহাট পৌরসভা সাধারণ নির্বাচনকে ঘিরে কেউ আইন–শৃঙ্খলা অবনতির চেষ্টা করলে রক্ষা নেই। প্রার্থীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকলে নির্বাচন বিতর্কিত হবে না। কোনো প্রার্থী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে ভোট কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাবে। জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে নির্বাচন করতে হবে। ভোট নিয়ে ফেসবুকে কোন ধরণের গুজব ছড়ালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, বোয়ালখালীর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে মোট ৮৬টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ সকল কেন্দ্রে ৫শ পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
র্যাব ও বিজিবি টহলের পাশাপাশি ৩টি ইউনিয়ন মিলে স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল টিম কাজ করবে। একটি কেন্দ্রে ১৮ জনের সেটআপ থাকবে। নির্বাচনী এলাকার আশপাশে গোয়েন্দা পুলিশের টিম ও চেক পয়েন্ট থাকবে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. রাকিব হাসানের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জামান, বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন, ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির রহমান সানি, র্যাবের প্রতিনিধি মো. খালিদ, মীরসরাই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারুক হোসাইন, বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুর রাজ্জাক, ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাসুদ রানা, ভূজপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন, বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. রেজাউল করিম রাজা, এস.এম মিজানুর রহমান, কাজী আয়েশা ফারজানা, নাজিরহাট পৌরসভার মেয়র পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইসমাইল, জাহাঙ্গীর চৌধুরী, নাছির উদ্দিন, একে জাহিদ চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো. সোলেমান, মো. আমান উল্লাহ আমান, মোহাম্মদ হোসেন, সলিমা আকতার, আবদুল ওয়াহাব, মো. মঞ্জুর মিয়া প্রমুখ।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, প্রশাসন ও আইন–শৃক্সখলা বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।