রাঙামাটিতে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে দুর্ঘটনা এড়াতে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহে আরেফিনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
চিরন বিকাশ দেওয়ান: পবিত্র ঈদ-উল-আযহার আগেই রাঙামাটি সড়ক বিভাগের অধীন ৬টি সড়কে মোট ২৪২ দশমিক ২৫ কি.মি. রাস্তার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সমূহে গাইড পোস্ট স্থাপন, শহরের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সমূহের সামনে দৃষ্টিনন্দন সাইন সিগন্যাল এবং ৩টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে ক্যাটস্ আই স্থাপন করেন রাঙামাটি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহে আরেফিন।
সওজ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়ক, রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়ক, ঘাগড়া-বাঙ্গালহালিয়া-বান্দরবান সড়ক, রানিরহাট-কাউখালি সড়ক, বাঘাছড়ি-নানিয়ারচর-লঙ্গদু সড়ক ও বাঙ্গালহালিয়া-রাজস্থলী সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকসমূহে গাইড পোস্ট ও সাইন সিগন্যাল স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও শহরের দৃষ্টিনন্দন ফিসারীঘাট বাঁধে, সাপছড়ি ইউনিয়নের দেপ্পোয়াছড়ির ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও ঘাগড়ার চরম ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি বাঁকসহ ৩টি পয়েন্টে ক্যাটস্ আই স্থাপন করা হয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই দৃষ্টিনন্দন গাইড পোস্ট, সাইন সিগন্যাল ও ক্যাটস্ আই স্থাপন করা হয়েছে। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা সড়কে প্রায়ই চালকগণ অসাবধানতাবশত দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পাহাড়ের গভীর খাদে পড়ে যায়। প্রতিবছর এ সকল আঁকাবাকা রাস্তায় দুর্ঘটনার কারনে অনেক প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে। গাইড পোস্ট এবং ক্যাটস্ আই স্থাপনের ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সওজের প্রকৌশলীগণ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাঙামাটি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহে আরেফিন দৈনিক প্রিয় বাংলাদেশকে জানান, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে রাঙ্গামাটি সড়ক বিভাগ সড়কের দুর্ঘটনা রোধে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকসমূহে গাইড পোস্ট ও সাইন সিগন্যাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। ইতোমধ্যে আমরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ৪’শরও বেশি গাইড পোস্ট স্থাপন করেছি। সড়কের কম ঝুঁকিপূর্ণ কিছু বাঁকে এখনও গাইড পোস্ট স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে মুজিব শতবর্ষেই বাকি কাজ গুলো আমরা সম্পন্ন করব ইনশাআল্লাহ।
রাঙ্গামাটিতে ব্যাতিক্রমধর্মী এই ক্যাটস্ আই স্থাপনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২টি কারণে এই ধরণের রেইজড পেভমেন্ট মার্কার ব্যবহার করা হয়। একটি হল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানো আর অপরটি হলো সৌন্দর্য বর্ধন। দেপ্পোয়াছড়ি ও ঘাগড়া এই সড়কাংশ ২টি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এগুলোতে ক্যাটস্ আই স্থাপন করা হয়েছে। আর ফিসারীঘাট বাঁধে দুর্ঘটনা রোধ ও সৌন্দর্যবর্ধন এই ২টি কারণকে সমন্বয় করেই ক্যাটস্ আই স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, একটি দুর্ঘটনা একটি পরিবারের জন্য অনেক বড় ক্ষতির কারণ হয়ে উঠে । রাস্তাঘাটে প্রায়ই চালকের অসাবধানতায় কিছু অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। ফলে প্রাণ যাচ্ছে অনেকের। কেউবা আবার হয়ে যাচ্ছেন চিরদিনের জন্য পঙ্গু। ক্যাটস্ আই বাতি স্থাপনের ফলে রাতে গাড়ি চালকরা রাস্তার সেন্টার লাইন ভাল করে বুঝতে পারছে এবং ঘুম কিংবা অসাবধানতা পরিহার করে নিরাপদে গাড়ি চালাতে পারছে। এতে করে পাহাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে দূর্ঘটনা অনেক হ্রাস পাবে।